খ্রিষ্টপূর্ব ৬২৩ অব্দে হিমালয়ের পাদদেশে অবস্থিত কপিলাবস্তু নগরে এক শিশু পুত্রের জন্ম হয়। যিনি পরবর্তী কালে সকল জীবের প্রতি অপরিমেয় মৈত্রী ও করুণা প্রদর্শন করে মহাকারুনিক বুদ্ধ নামে আখ্যায়িত হন। তাছাড়া তাঁর অপরিমিত গুণরাশিকে কেন্দ্র করে বিভিন্ন বিশেষণে বিশেষায়িত করা হয়।
গৌতম বুদ্ধ দীর্ঘ ৪৫ বছর ধর্ম প্রচার করার পর ৮০ বছর বয়সে কুশিনগরে যমক শালবনবৃক্ষের নিচে মহাপরিনির্বাণ লাভ করেন। ভারতবর্ষের সব রাজন্য ও শ্রেষ্ঠীদের উপস্থিতিতে মহাকাশ্যপ বুদ্ধের চিতায় অগ্নি সংযোগ করেন। পরে ব্রাহ্মণ দ্রোনাচার্য তথাগত বুদ্ধের অস্থিধাতু আটজন রাজা এবং চিতাভস্ম মৌর্যরাজকে ভাগ করে দেন।
দুঃখ মুক্তির লক্ষ্যে কঠোর তপস্যা করতে গিয়ে সিদ্ধার্থ উপলদ্ধি করলেন- কঠোর তপস্যায় জীবন বিপন্ন হয়। তাই তিনি অন্য একটি পন্থা অবলম্বন করলেন। এভাবে ছয় বছর তপস্যার পর বৈশাখি পূর্ণিমা তিথিতে 'চার আর্যসত্য' সম্পর্কে যথার্থ জ্ঞান উপলব্ধি করলেন। পরবর্তীতে এই জ্ঞান জীব জগতের কল্যাণে প্রচার করেন।
সংসার ত্যাগী বৌদ্ধ ভিক্ষু শ্রমণদের সুষ্ঠু ও সুন্দর পরিশীলিত জীবন গঠনের জন্য এবং নৈমিত্তিক জীবনাচারে পরিশুদ্ধতা বজায় রাখার জন্য মহাকারুনিক বুদ্ধ বিনয়ের প্রবর্তন করেছিলেন। এতে পরোক্ষ ও প্রচ্ছন্নভাবে সাধারণ মানুষের জন্য ও অনেক শিক্ষণীয় বিষয় রয়েছে।
নিধিকুন্ড' সূত্রে বুদ্ধ বলেছেন-জাগতিক অর্থ বা ধন প্রকৃত সুনিহিত নিধি বা ধন নয়। দান, সংযম, দম, চৈত, প্রতিষ্ঠা, সংঘ, মাতা- পিতা, অতিথি, জ্যেষ্ঠ ভ্রাতা-ভগ্নির সেবায় যে ধন বা পুণ্য অর্জিত হয়, সে ধনই প্রকৃত নিধি। যা অজেয় ও অনুগামী।
অমনুষ্যের উপদ্রব ও ভয় থেকে পরিত্রাণের জন্য বুদ্ধ করণীয় মৈত্রী সূত্র দেশনা করেন। এই সূত্রে নির্বাণ লাভে ইচ্ছুক ব্যক্তিগণের জন্য করণীয় মৈত্রী ভাবনার নির্দেশনা আছে।
গৌতম বুদ্ধ ছিলেন সর্বজনীন মূল্যবোধের মূর্ত প্রতীক। সব সত্ত্বার সর্বাঙ্গীন মঙ্গলই তাঁর ধ্যান, জ্ঞান ও দর্শনের মূল ভিত্তি। অন্যের মঙ্গল ও দুঃখ মুক্তিই ছিল তাঁর ভাবনার বিষয়। তাঁর অন্তরে সব সময় বিরাজমান ছিল অন্যের মতামতকে শ্রদ্ধা করার প্রবণতা।
আপনি আমাকে যেকোনো প্রশ্ন করতে পারেন, যেমনঃ
Are you sure to start over?